সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
বাড়িঘর লুটপাট ও ভাঙচুরের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের তিন সন্তানের এক জননীকে (৩৫) গণধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট সোমবার রাত ৮টার দিকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারী বর্তমানে খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের এক কৃষকের স্ত্রী তিন সন্তানের জননী জানান, বাবা ও মা মারা যাওয়ার পর ভাই না থাকায় স্বপরিবারে সেখানেই বসবাস করেন তারা। প্রোষ্টেড গ্লাণ্ডে মাংস বৃদ্ধি পাওয়ায় তার স্বামী কয়েকদিন যাবৎ খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গত ৫ আগস্ট সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের ফলে দাসপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তিনি এক ছেলে ও মেয়েকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়ে বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার পরপরই ৩০-৩৫ জন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত তাদের (শ্বশুর) বাড়িতে এসে লাইট ভেঙে দিয়ে দরজা ও জানালা ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা ঘর থেকে তার স্ত্রীর হাতের সোনার বালা, কানের দুল, অপারেশনের জন্য রাখা নগদ এক লাখ টাকা, জমির দলিল, টিভিসহ কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে। একপর্যায়ে এক লুটেরা তাকে হাত ধরে বাড়ির পাশে গোয়ালঘরের পিছনে নিয়ে যায়। এরপরপরই সেখানে চলে যায় আরো চারজন। তাদের কথা না শুনলে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে বিরানভূমিতে পরিণত করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। ঘরবাড়ি আর ভাঙচুর না করার অনুরোধ জানালে একপর্যায়ে পাঁচজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ঘটনা কাউকে জানালে ভারতে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দেয় মুখোশধারী ধর্ষণকারীরা। বিষয়টি কিছুক্ষণ পর খুলনায় অবস্থানকারী তার স্বামীকে মোবাইল ফোনে অবহিত করে সেখানে চলে যান। তাকে খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ধর্ষিতার স্বামী জানান, স্ত্রীকে ধর্ষণের কথা জানতে পেরে তারা বাড়ি ছেড়ে দেন। একপর্যায়ে স্থানীয় জামায়াত নেতা ডাঃ কামাল ও এবাদুলের আশ্বাসে গত মঙ্গলবার সকালে তিনি বাড়িতে আসেন। তার স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তারা। এরপরও তার স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে জামায়াত নেতা ডা. কালাম এর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। গতকাল বুধবার বিকেলে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, এ ধরনের ঘটনা তাকে কেউ জানাননি। তবে নাম ঠিকানা পেলে ভিকটিম পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
